গর্ভাবস্থার সময় সঠিক যত্ন নেওয়া একজন মায়ের পাশাপাশি পুরো পরিবারের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে আমরা যারা প্রবাসে থাকি, তাদের জন্য এই সময়টা অনেক বেশি সংবেদনশীল হয়। কারণ অনেক সময় পরিবারের কাছে না থাকার ফলে মানসিক চাপ বেড়ে যায়। সম্প্রতি বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংস্থা গর্ভাবস্থার নিয়মিত চেকআপ, সুষম খাদ্যাভ্যাস এবং মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে বেশি নজর দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে, যা এখনকার সময়ে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
গর্ভকালীন যত্নে প্রথম যে বিষয়টি সবসময় গুরুত্ব পায়, তা হলো নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া। এখন তো বিভিন্ন হাসপাতাল এবং ক্লিনিক অনলাইন অ্যাপয়েন্টমেন্টের সুযোগ দিচ্ছে, ফলে ব্যস্ত সময়েও পরীক্ষা করানো তুলনামূলক সহজ হয়ে গেছে। একজন পরিচিত ভাই তার স্ত্রীর প্রথম সন্তান আসার সময় বলছিলেন, নিয়মিত আল্ট্রাসোনো এবং প্রয়োজনীয় রক্তপরীক্ষা করানোর কারণে তারা অনেক ছোটখাটো জটিলতা আগেই বুঝতে পেরেছিলেন। এতে মাশাআল্লাহ মা ও বাচ্চা দুজনেই সুস্থ ছিল।
খাবারদাবার নিয়ে সচেতন হওয়াটাও খুব জরুরি। গর্ভাবস্থায় বেশি করে শাকসবজি, ফলমূল, ডাল, মাছ এবং পর্যাপ্ত পানি গ্রহণ করলে শরীর শক্তি পায় এবং রক্তস্বল্পতার মতো সমস্যা কমে। প্রবাসে থাকা অনেক বোনের কাছ থেকেই শোনা যায় যে তারা মাঝে মাঝে নিজের দেশে খাওয়া খাবারগুলো মিস করেন, বিশেষ করে মজাদার খিচুড়ি বা ইলিশ মাছ। তবে সম্ভব হলে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে ঘরে রান্না করা খাবারই এই সময় সবচেয়ে উপকারী। পাশাপাশি কফি বা চা খুব বেশি না খাওয়ার পরামর্শও চিকিৎসকেরা দিয়ে থাকেন।
মানসিক স্বাস্থ্যের যত্নও এই সময়ে সমানভাবে জরুরি। গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তনের কারণে অনেক সময় মেজাজ খিটখিটে হয়ে যেতে পারে, ঘুম কমে যেতে পারে বা ছোট বিষয়েই দুশ্চিন্তা বাড়তে পারে। তাই পরিবার এবং স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সহযোগিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একজন আপা বলছিলেন, তাঁর স্বামী প্রতিদিন সন্ধ্যায় একটু হাঁটার জন্য বাইরে নিয়ে যেতেন, এতে তাঁর মানসিক অবস্থাও ভালো থাকত এবং শারীরিকভাবেও উপকার হতো। ইনশাআল্লাহ এমন ছোটখাটো সহায়তার মাধ্যমেও বড় পরিবর্তন আনা সম্ভব।
সর্বোপরি, গর্ভাবস্থায় সঠিক যত্ন এবং নিয়মিত ফলোআপ একটি সুস্থ সন্তান ও নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। আলহামদুলিল্লাহ এখন সচেতনতা অনেক বেড়েছে, এবং তথ্য সহজলভ্য হওয়ায় যেকোনো মা নিজের যত্ন সম্পর্কে আগের চেয়ে বেশি জানার সুযোগ পাচ্ছেন। প্রবাসে থাকলেও পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখলে মানসিক শক্তি বাড়ে এবং পুরো সময়টা আরও সুন্দরভাবে পার করা যায়। ইনশাআল্লাহ সচেতনতা ও ধৈর্য ধরে চললে এই বিশেষ সময়টা আনন্দময় অভিজ্ঞতায় পরিণত হতে পারে।
Top comments (4)
probash e thakle regular checkup er jonno kothay jawa bhalo, kono specific recommendation ache apnar?
আমার প্রেগন্যান্সির সময় এত খাওয়াইছে সবাই যে বাচ্চার চেয়ে আমি বেশি ওজন বাড়াইছিলাম 😂
আমার বউয়ের প্রথম প্রেগনেন্সির সময় আমরাও প্রবাসে ছিলাম, মা-বাবা কাছে না থাকায় কী যে কষ্ট হইছিল বলার বাইরে। আলহামদুলিল্লাহ এখন সব ঠিক আছে, কিন্তু ওই সময়ের কথা মনে পড়লে এখনো চোখ ভিজে যায়।
প্রবাসে থাকলেই যে মানসিক চাপ বাড়ে এটা সবার ক্ষেত্রে সত্য না ভাই, অনেকের তো বরং দেশের চেয়ে ভালো সুযোগ সুবিধা পায় সেখানে।