স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা অনেক দিন ধরেই বলছেন যে ওজন নিয়ন্ত্রণ এখন শুধু সৌন্দর্যের ব্যাপার নয়, বরং সামগ্রিক সুস্থতার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ১২ অক্টোবর ২০২৫ অনুযায়ী দেশে স্বাস্থ্যসচেতন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে, বিশেষ করে শহুরে এলাকায়। সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকার বিভিন্ন ফিটনেস সেন্টারে মানুষের ভিড় দেখে বোঝা যায় যে মানুষ এখন আগের তুলনায় নিজেদের জীবনধারা বদলাতে বেশি আগ্রহী। তবে অনেকেই জানেন না ঠিক কোন অভ্যাসগুলো সত্যিই কাজে দেয় আর কোনগুলো কেবল প্রচলিত কথা।
বরিশালে আমার এক পরিচিত ভাই আছেন, তিনি গত কয়েক মাস ধরে নিয়মিত হাঁটা আর খাদ্যাভ্যাস বদলে আলহামদুলিল্লাহ ভালো ফল পেয়েছেন। তিনি বলেন, সকালবেলা ৩০ মিনিট হাঁটা আর বিকেলে হালকা দৌড় তাকে অনেকটা চাঙ্গা রাখে। তার অভ্যাস হলো সকালে এক গ্লাস কুসুম গরম পানি খাওয়া, সাথে লেবু। এটা অনেকেই অনুসরণ করেন, এবং আমার নিজেরও মনে হয় এতে হজম প্রক্রিয়া একটু সক্রিয় হয়। তবে চিকিৎসকেরা বলেন, শুধু পানি বা কোনো বিশেষ পানীয়ের ওপর নির্ভর করলে হবে না, পুরো জীবনধারা বদলাতে হবে।
খাদ্যাভ্যাসের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের সাধারণ পরামর্শ হলো পরিমাণে কম খাওয়া এবং ভাজাপোড়া এড়ানো। আমাদের দেশে ইলিশ, খিচুড়ি কিংবা বিরিয়ানির প্রতি টান না থাকাটা কঠিন, তবে মাঝেমধ্যে খাওয়াতেই ভালো। দৈনন্দিন খাবারে শাকসবজি, লিন প্রোটিন এবং পর্যাপ্ত পানি রাখা খুবই জরুরি। অনেকেই এখন অফিসে বা বাড়িতে Pathao Food বা Daraz Mart থেকে অর্ডার করা খাবারের ওপর নির্ভরশীল, কিন্তু নিয়ন্ত্রণ না থাকলে ক্যালরি বেড়ে যায়। তাই নিজের জন্য সঠিক পরিমাণ ঠিক করে নেওয়া ভালো।
আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ঘুম এবং মানসিক চাপ কমানো। অনেকেই রাত জাগা, অতিরিক্ত কাজের চাপ বা অনিয়মিত রুটিনের কারণে ওজন বাড়তে দেখেন। চিকিৎসকেরা বলেন, প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ভালোভাবে ঘুমাতে পারলে শরীরের বিপাকক্রিয়া স্বাভাবিক থাকে। চা বা কফি অনেকেই বেশি খান, বিশেষ করে অফিসে, কিন্তু এগুলোর ব্যবহারও সীমিত রাখা উচিত। ইনশাআল্লাহ নিয়মিত রুটিনে থাকলে চাপও কমে এবং শরীরও সুস্থ থাকে।
সবশেষে, যেকোনো ওজন কমানোর পরিকল্পনা শুরু করার আগে চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া সবচেয়ে নিরাপদ উপায়। নিজের শরীরের ধরন না বুঝে কোনো কঠোর ডায়েট বা কঠিন ব্যায়াম শুরু করলে উল্টো ক্ষতি হতে পারে। নিয়মিততা, ধৈর্য, আর সুস্থ অভ্যাসের সমন্বয়ই আসলে দীর্ঘমেয়াদে ফল দেয়। মাশাআল্লাহ যারা ইতিমধ্যে চেষ্টা করছেন, তাদের জন্য এটি অবশ্যই অনুপ্রেরণার বিষয়।
Top comments (0)