বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ব্যবসায়ী ও প্রযুক্তি খাতের লোকজনের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে, বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে দাম বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক বাজারের ওঠানামা এবং ডলার সংকটের মতো বিষয়গুলোর কারণে। ৭ মার্চ ২০২৫ অনুযায়ী সামগ্রিক পরিবেশ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে অনেক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও আমাদের অর্থনীতি ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতার দিকে যেতে চেষ্টা করছে। ব্যক্তিগতভাবে খুলনায় আইটি খাতের সঙ্গে যুক্ত একজন হিসেবে আমি দেখছি সফটওয়্যার আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে আগ্রহ বাড়ছে, ইনশাআল্লাহ এটি ভবিষ্যতে আরও বড় অবদান রাখতে পারে।
একটি উল্লেখযোগ্য প্রবণতা হচ্ছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আরও গভীরভাবে যুক্ত হওয়া। আজকাল অনেক ছোট ব্যবসা bKash পেমেন্ট, Facebook পেইজ ভিত্তিক বিক্রি এবং Pathao ও Daraz এর মত প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে কার্যক্রম বাড়াচ্ছে। এতে করে খরচ কিছুটা কমলেও প্রতিযোগিতা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। আমি দেখেছি খুলনা এলাকার অনেক তরুণ অনলাইন ভিত্তিক কাপড়, খাবার বা মোবাইল অ্যাক্সেসরিজ বিক্রি শুরু করেছে। আলহামদুলিল্লাহ অনেকেই ভালো করছে, তবে মার্কেটিং খরচ ও ডেলিভারি চার্জ নিয়ে আবারও চিন্তা বাড়ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন যে ভোক্তা ব্যয় কমে যাওয়ায় সেল আগের মতো দ্রুত বাড়ছে না।
চলমান মূল্যস্ফীতির চাপে সাধারণ মানুষের কেনাকাটার অভ্যাসও পরিবর্তিত হয়েছে। বাজারে গেলে সবাই এখন তুলনামূলক সস্তা বিকল্প পণ্য খুঁজে। বিশেষ করে চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, সবজি ইত্যাদির দাম বাড়ার কারণে পরিবারগুলো বাজেট নিয়ে বেশি হিসাব করতে বাধ্য হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা আবার বলছেন আমদানি নির্ভর কাঁচামালের দাম বাড়ার কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। ফলে প্রফিট মার্জিন ঠিক রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে সরকার ও বেসরকারি খাত মিলিয়ে কিছু নীতি সহায়তা দিলে ব্যবসা পুনরুদ্ধার আরও দ্রুত হতে পারে বলে মনে হয়।
সফটওয়্যার খাতের দিক থেকে দেখলে আজকাল অনেক প্রতিষ্ঠান বিদেশি ক্লায়েন্টের সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করছে, কারণ ডলারে আয় হলে লাভজনক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আমি নিজেও সম্প্রতি কিছু প্রজেক্টে কাজ করেছি যেখানে ক্লায়েন্টরা সাশ্রয়ী রেটে ভালো মানের আউটপুট পেয়ে সন্তুষ্ট। মাশাআল্লাহ বাংলাদেশের ডেভেলপারদের দক্ষতা মানসম্মত হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার সুযোগ রয়েছে। তবে স্থিতিশীল ইন্টারনেট, দক্ষ রিসোর্স তৈরি এবং সরকারি প্রণোদনা আরও জোরদার হলে পরিস্থিতি আরও উন্নত হতে পারে।
সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতি একটি রূপান্তরের পর্যায়ে আছে। কিছু সেক্টর চাপে থাকলেও প্রযুক্তি, কৃষি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায় নতুন সুযোগ তৈরি হচ্ছে। সামনে বাজেট, নীতি পরিবর্তন বা আন্তর্জাতিক বাজারের আচরণ আমাদের অর্থনীতির ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। ইনশাআল্লাহ পরিস্থিতি ধীরে ধীরে আরও ভালো হবে, তবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে সবাইকে সতর্ক পরিকল্পনা ও বাস্তবভিত্তিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে 🙂
Top comments (0)