ঢাকার উত্তরা এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণদের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে টিভি শো নিয়ে যে আলোচনার জোয়ার দেখা যাচ্ছে তা সত্যিই নজরকাড়া। অনলাইন ফোরাম, ফেসবুক গ্রুপ এবং ইউটিউব রিভিউতে নানা ধরনের শো নিয়ে মতামত দিচ্ছেন দর্শকরা। বিনোদন জগতে এখন এত বিকল্প যে কোনটা দেখা উচিত আর কোনটা সময় নষ্ট তা নিয়েই চলছে বিশাল বিতর্ক। অনেকেই বলছেন যে দৈনন্দিন ব্যস্ততার মাঝে ভালো মানের টিভি শো মানসিক রিলাক্স দিতে দারুণভাবে সাহায্য করে।
সম্প্রতি প্রায় উনিশ দিন আগে মুক্তি পাওয়া তাণ্ডব সিনেমার সফলতা নিয়ে যত আলোচনা হয়েছে, সেটার একটি প্রতিফলন এখন টিভি শোর ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশি দর্শকরা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি গল্পনির্ভর, চরিত্রসমৃদ্ধ এবং সিনেম্যাটিক অনুভূতির সিরিজ দেখতে চান। তাণ্ডব ছিল দেশের প্রথম সিনেম্যাটিক ইউনিভার্স, আর এই ধারণা অনেককে ভাবাচ্ছে টিভি ফরম্যাটেও কি ভবিষ্যতে এমন ইউনিভার্স দেখা যেতে পারে। ইনশাআল্লাহ যদি দেশি প্রোডাকশন ধারাবাহিকভাবে উন্নত হয়, তাহলে টিভি কন্টেন্টেও নতুনত্ব আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
আমি নিজেও উত্তরা থেকে প্রতিদিন ক্লাস শেষে বাসায় ফিরে কিছু সময় টিভি শো দেখে রিল্যাক্স করার চেষ্টা করি। বিশেষ করে যেসব শোতে সামাজিক গল্প, পরিবার কেন্দ্রিক প্লট বা হালকা কমেডি থাকে সেগুলো খুব ভালো লাগে। অনেক সময় দেখা যায় যে বাইরে ট্রাফিকের জ্যাম বা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসাইনমেন্টের চাপ মাথা ঘুরিয়ে দেয়, কিন্তু একটা ভালো শো দেখে মনটা অনেকটা হালকা হয়ে যায় আলহামদুলিল্লাহ। মিরপুর কিংবা ধানমন্ডির বন্ধুদের সঙ্গেও প্রায়ই এসব শো নিয়ে আলোচনা হয়, কে কোন এপিসোডে কি মেসেজ পেল বা কোন চরিত্রটা কতটা বাস্তবসম্মত লাগল সেই নিয়ে জমে ওঠে কথাবার্তা।
দর্শকদের অনেকে মনে করেন যে আন্তর্জাতিক স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের শো গুলো যেমন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে, তেমনভাবে দেশি শোগুলোকেও আরও উন্নত পরিকল্পনা, স্ক্রিপ্ট এবং প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি করা উচিত। এতে দেশীয় শিল্পী এবং টেকনিক্যাল টিমও উপকৃত হবে, আর দর্শকের সামনে আরও মানসম্মত কন্টেন্ট আসবে। Pathao বা bKash নিয়ে যেমন আমরা দেশীয় উদ্ভাবন নিয়ে গর্ব করি, ঠিক তেমনি টিভি শোতেও দেশি ব্র্যান্ডের শক্তিশালী উপস্থিতি দেখতে চাই সবাই। মাশাআল্লাহ আমাদের তরুণ নির্মাতাদের কাজ দেখে মনে হচ্ছে সামনে আরও ভালো কিছু আসছে।
সর্বোপরি বলা যায় যে বর্তমান প্রজন্ম টিভি শোকে কেবল বিনোদন নয় বরং একটি সামাজিক আলোচনার অংশ হিসেবেও দেখছে। কোন শোতে কি বার্তা আছে, সমাজের কোন দিকগুলো ফুটে উঠছে, কিংবা কোন চরিত্র বাস্তব জীবনের সঙ্গে মেলে কিনা এসব নিয়েই এখন জমে উঠছে অনলাইন অফলাইন সবজায়গায় আলোচনা। ইনশাআল্লাহ যদি এই ইতিবাচক আগ্রহ ধরে রাখা যায়, তাহলে বাংলাদেশি টিভি কন্টেন্টের মান আরও উন্নত হবে এবং দর্শকরাও আরও সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা পাবেন।
Top comments (0)