Banglanet

দেশে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ছে, সেবার চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে

১৩ জুলাই ২০২৫, সিলেট থেকে: সাম্প্রতিক সময়ে দেশে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, গত কয়েক বছর ধরে মানুষ স্ট্রেস, উদ্বেগ, নিদ্রাহীনতা এবং কাজের চাপ নিয়ে আগের তুলনায় বেশি কথা বলতে শুরু করেছে, যা একটি ইতিবাচক পরিবর্তন। পরিবারভিত্তিক সহায়তা, অনলাইন কাউন্সেলিং এবং হেল্পলাইন ব্যবহারের প্রবণতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষত তরুণ প্রজন্ম এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যের কথা খোলামেলা আলোচনা করছে, যা সমাজে ট্যাবু ভাঙতে সাহায্য করছে।

বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সংখ্যা এখনো পর্যাপ্ত না হলেও, চিকিৎসা সুবিধার প্রাপ্যতা ধীরে ধীরে বাড়ছে। বড় শহরগুলোর পাশাপাশি সিলেট, খুলনা এবং রাজশাহী অঞ্চলেও নতুন সাইকোলজি সেন্টার ও কাউন্সেলিং সার্ভিস চালু হয়েছে। অনেক হাসপাতাল এখন নিয়মিত মানসিক স্বাস্থ্য স্ক্রিনিং করার পরামর্শ দিচ্ছে। গ্রামীণ এলাকায় এখনও সচেতনতা তুলনামূলক কম হলেও সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর যৌথ উদ্যোগ এই ব্যবধান কমাতে কাজ করছে। ইনশাআল্লাহ আগামী দিনে এ ক্ষেত্রে আরও অগ্রগতি দেখা যাবে।

মানসিক চাপ যে শুধু শহুরে মানুষের সমস্যা তা নয়, পরিবারের দায়িত্ব, চাকরির চাপ এবং আর্থিক টানাপোড়েন—সব মিলিয়ে দেশের অনেক পরিবারই এখন মানসিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। এক সিলেটি পরিবার জানিয়েছেন যে দীর্ঘদিন ধরে চাকরি পরিবর্তন এবং আর্থিক বিষয় নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছিল, ফলে ঘুমের সমস্যা দেখা দেয়। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত কাউন্সেলিং ও লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে অবস্থার উন্নতি হয়, আলহামদুলিল্লাহ। এই ধরনের বাস্তব অভিজ্ঞতা দেখায় যে সময়মতো সহায়তা নিলে মানসিক স্বাস্থ্য অনেকটাই ভালো রাখা সম্ভব।

অনলাইন ভিত্তিক সেবা যেমন ভিডিও কাউন্সেলিং, মানসিক স্বাস্থ্য অ্যাপ এবং ফ্রি হেল্পলাইন বর্তমানে ভালো সাড়া পাচ্ছে। বাংলাদেশের জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মগুলি এখন মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত কনটেন্ট ও সচেতনতামূলক ভিডিও প্রচার করছে। অনেকেই বলেছেন যে বাসায় বসে, পরিবারের মধ্যে থেকে কাউন্সেলরের সাথে কথা বলা তাদের জন্য বড় স্বস্তির বিষয় হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি যত বদলাবে, মানুষ তত দ্রুত সাহায্য নিতে আগ্রহী হবে।

সামগ্রিকভাবে দেখা যাচ্ছে, মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে দেশের মনোভাব দ্রুত বদলাচ্ছে। যেসব পরিবার আগে এসব বিষয় লুকিয়ে রাখতেন তারা এখন খোলামেলা কথা বলছেন, সাহায্য নিচ্ছেন এবং অন্যদেরও উৎসাহ দিচ্ছেন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সময়মতো সঠিক পরামর্শ, নিয়মিত বিশ্রাম, সুস্থ সামাজিক সম্পর্ক এবং পরিবারের সমর্থন মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাশাআল্লাহ দেশের মানুষ এখন সেই দিকেই এগোচ্ছে, যা ভবিষ্যতের জন্য একটি আশাব্যঞ্জক সংকেত।

Top comments (0)