Banglanet

তিশা রহমান
তিশা রহমান

Posted on

নামাজের নিয়ম শিখে আমার জীবনে বদলের গল্প

ধানমন্ডিতে থাকি অনেক বছর ধরেই, আলহামদুলিল্লাহ পরিবার নিয়ে শান্তিতে আছি। কিন্তু সত্য কথা বলতে কি, কয়েক বছর আগেও নামাজ নিয়মিত পড়া আমার পক্ষে খুব সহজ ছিল না। বাড়ির কাজ, বাচ্চাদের দেখাশোনা, বাজার করা এইসবের ভিড়ে সময় ঠিকমতো বের করতে পারতাম না। ২০২৫ সালের শুরুর দিকে মনে হল এবার নিজেকে একটু গুছিয়ে নেওয়া দরকার। ইনশাআল্লাহ সেই ভাবনা থেকেই আবার নামাজের নিয়ম ঠিকমতো শেখার যাত্রা শুরু করলাম।

প্রথম দিকে আমি মৌলিক নিয়মগুলোর দিকেই বেশি মন দিলাম। যেমন অজু করার সঠিক পদ্ধতি, নামাজের কিয়াম, রুকু, সেজদা, তাশাহহুদ সবকিছু ধীরে ধীরে রুটিনে আনার চেষ্টা করলাম। মাঝেমধ্যেই ইউটিউবের বিশ্বস্ত ইসলামি চ্যানেল থেকে দেখে নিতাম, আবার স্থানীয় মহিলা কোরআন ক্লাসেও কয়েকদিন যোগ দিয়েছিলাম। সেখানে আপারা খুব আন্তরিকভাবে মুখস্থ দোয়াগুলো বুঝিয়ে দিতেন। মাশাআল্লাহ তাদের সহায়তা আমার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়।

নামাজের সময়গুলো নিয়মিত পালন করাও একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। বিশেষ করে যোহর আর আসর নামাজই বেশি মিস হয়ে যেত, কারণ তখনই রান্না আর ঘরের কাজ বেশি থাকে। তাই আমি ছোট একটা রুটিন বানালাম। রান্না শুরু করার আগে যোহর পড়ে নিই, আর আসরের জন্য ফোনে রিমাইন্ডার সেট করে রাখি। Pathao খাবারের ডেলিভারি এলে যেভাবে দরজা খোলার শব্দ সঙ্গে সঙ্গে শুনে ফেলি, ঠিক তেমনি আজকাল আজানের সুর শুনলেই মন নিজে থেকেই সাড়া দেয়। আলহামদুলিল্লাহ এই পরিবর্তনটা আমার মনে এক ধরনের শান্তি নিয়ে এসেছে।

এখন নামাজ শুধু একটা ধর্মীয় দায়িত্ব নয়, বরং দিনের ভেতর শান্তি আর ভারসাম্য খুঁজে পাওয়ার জায়গা হয়ে গেছে। ধানমন্ডির ব্যস্ত জীবনে যখন চারদিকের শব্দে মন ক্লান্ত হয়ে যায়, তখন সেজদায় গিয়ে যে প্রশান্তি পাই সেটা ভাষায় বোঝানো কঠিন। তাই ভাবলাম আমার অভিজ্ঞতাটা এখানে শেয়ার করি, হয়তো আরেকজন গৃহিণী আপার জীবনেও একটু অনুপ্রেরণা দিতে পারবে। ইনশাআল্লাহ নিয়মিত চেষ্টা আর মনোযোগ থাকলে নামাজের নিয়ম ঠিকমতো মানা একেবারেই কঠিন নয়। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সহজ করে দিন। আমিন।

Top comments (0)