আসসালামু আলাইকুম ভাইয়েরা। আজকে একটু পুরনো দিনের কথা শেয়ার করতে মন চাইছে। ছোটবেলায় বরিশালে আমাদের বাড়ির পাশে একটা মসজিদ ছিল। আব্বা প্রতিদিন ফজরের নামাজে আমাকে নিয়ে যেতেন। তখন আমার বয়স সাত কি আট হবে। নামাজের নিয়ম কিছুই জানতাম না, শুধু আব্বার পাশে দাঁড়িয়ে তাকে দেখে দেখে করতাম। একদিন হুজুর আমাকে ডেকে বললেন, বাবা তোমাকে এবার ঠিকমতো শিখতে হবে।
সেই থেকে শুরু হলো আমার নামাজ শেখা। প্রথমে অজু শিখলাম। হুজুর বললেন অজু ছাড়া নামাজ হয় না, এটা নামাজের চাবি। তারপর শিখলাম কিভাবে কেবলামুখী হয়ে দাঁড়াতে হয়, নিয়ত করতে হয়। তাকবিরে তাহরিমা বলে হাত বাঁধা, সানা পড়া, সূরা ফাতিহা, তারপর অন্য একটা সূরা। রুকু, সিজদা, তাশাহুদ, দরুদ, দোয়া মাসুরা আর সালাম ফেরানো। প্রতিটা ধাপ আলাদা আলাদা করে শিখেছিলাম। মাশাআল্লাহ হুজুর এত ধৈর্য ধরে শেখাতেন যে এখনো মনে পড়লে কৃতজ্ঞতায় বুক ভরে যায়।
একটা কথা বলি ভাই, নামাজ শুধু নিয়ম মেনে পড়লেই হয় না। হুজুর বলতেন নামাজে মন থাকতে হবে। আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে আছি এই অনুভূতি রাখতে হবে। প্রথম দিকে আমার মন অনেক ছুটাছুটি করতো। কখনো খেলার কথা মনে পড়তো, কখনো বন্ধুদের কথা। আস্তে আস্তে অভ্যাস হলো। এখন আলহামদুলিল্লাহ নামাজে দাঁড়ালে মনে একটা শান্তি আসে যেটা অন্য কোথাও পাই না।
আজকাল IT সেক্টরে কাজ করি, অনেক ব্যস্ততা। কিন্তু পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মিস করার চেষ্টা করি না। অফিসে নামাজের সময় হলে একটু সময় নিয়ে পড়ে নিই। সহকর্মীরাও বোঝে, কেউ কিছু বলে না। বরং কয়েকজন জিজ্ঞেস করেছে কিভাবে নামাজ শুরু করবে। তাদের বলেছি প্রথমে ফরজ নামাজগুলো ঠিকমতো শিখুন, তারপর ধীরে ধীরে সুন্নত নফল যোগ করবেন। ইনশাআল্লাহ আল্লাহ সবাইকে সঠিক পথে রাখুন।
যারা নতুন নামাজ শিখছেন তাদের বলবো ধৈর্য রাখুন। একদিনে সব হবে না। আমার প্রায় ছয় মাস লেগেছিল পুরো নামাজ মুখস্থ করতে। এখন YouTube তে অনেক ভালো ভিডিও আছে, দেখে শিখতে পারেন। তবে কোনো আলেমের কাছে গিয়ে শিখলে সবচেয়ে ভালো হয়। আল্লাহ হাফেজ।
Top comments (0)