১০ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পরিবেশগত পরিবর্তন নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে শীতের তারতম্য, বায়ুদূষণের মাত্রা বৃদ্ধি এবং নদীর পানির প্রবাহ কমে যাওয়া বিজ্ঞানী ও পরিবেশবিদদের উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলছে। বিশেষ করে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বায়ু মান সূচক প্রতিদিনই আলোচনায় থাকছে, কারণ অনেক দিনই সাধারণ মানুষের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে। গবেষকেরা বলছেন, নগরায়ন এবং শিল্পকারখানা বৃদ্ধির ফলে বায়ুমান অবনতির হার আরও দ্রুত হচ্ছে।
বরিশাল অঞ্চলে কর্মরত একজন চিকিৎসক হিসেবে আমিও নিজের অভিজ্ঞতায় দেখছি, সাম্প্রতিক শুষ্ক মৌসুমে রোগী সংখ্যা বেড়ে গেছে। শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জি এবং চোখ জ্বালাপোড়ার মতো সমস্যা নিয়ে প্রতিদিনই অনেকে হাসপাতালে আসছেন। আলহামদুলিল্লাহ চিকিৎসাসেবা দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছি, তবে এ ধরনের রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে থাকলে ভবিষ্যতে আরও চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিবেশের ওপর চাপ কমাতে হলে জনগণকে সচেতন করা এবং দীর্ঘমেয়াদে টেকসই নীতিমালা গ্রহণ করা জরুরি।
পরিবেশ গবেষকেরা উল্লেখ করছেন যে খরা ও অতিবৃষ্টির মতো চরম আবহাওয়া পরিস্থিতি এখন আর কেবল গল্প নয়, বরং বাস্তবতা। দেশের উত্তরাঞ্চলে মাঝে মাঝে মৌসুমি বৃষ্টি কম পাওয়া যাচ্ছে, অন্যদিকে উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততা বৃদ্ধি কৃষিকে চাপে ফেলছে। আমার এক কৃষক আত্মীয় পিরোজপুরে জানিয়েছেন যে আগে যেখানে তিন ধরণের ফসল ফলানো যেত, এখন সেখানে এক বা দুই মৌসুমেই সীমাবদ্ধ থাকতে হচ্ছে। এই পরিবর্তন বিজ্ঞানীদের মতে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ধারাবাহিক প্রভাবের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই সঠিক পদক্ষেপ নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি, বনায়ন কার্যক্রম জোরদার করা এবং নদীগুলোর স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করা পরিবেশ রক্ষার গুরুত্বপূর্ণ উপায় হতে পারে। পাশাপাশি জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা এবং স্কুল পর্যায়েই পরিবেশ শিক্ষা আরও বিস্তৃত করা গেলে আগামী প্রজন্ম উন্নত পরিবেশের সুবিধা পাবে ইনশাআল্লাহ। দেশের উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ এখন সময়ের দাবি, এবং এ নিয়ে সম্মিলিত উদ্যোগই পারে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে।
Top comments (0)