খুলনায় বড় হয়ে ওঠার সুবাদে স্থানীয় ক্রিকেট নিয়ে আমার আলাদা একটা টান আছে। আমাদের এখানে সন্ধ্যার পর মহল্লার মাঠে যে ক্রিকেটের আড্ডা জমে, তা সত্যি বলতে গেলে শহরের ব্যস্ততা থেকে একটু নিঃশ্বাস নেওয়ার মতোই। যতই প্রিমিয়ার লিগ বা আইসিসি টুর্নামেন্ট দেখা হোক, মাঠের পরতে পরতে যে ঘ্রাণ, যে উত্তেজনা, তা শুধু এই স্থানীয় ক্রিকেটেই পাওয়া যায়। আলহামদুলিল্লাহ, এখনো অনেক তরুণ নিয়মিত ব্যাট আর বল হাতে মাঠে নামছে, যা সত্যিই আশাব্যঞ্জক।
তবে সমস্যা আছে বললেই চলে। আমাদের অনেক ওয়ার্ডে মাঠের অভাব এতটাই প্রকট যে ছেলেরা মাঝেমধ্যে স্কুলের সামনের ফাঁকা জায়গা কিংবা রাস্তায় গিয়ে খেলতে বাধ্য হয়। আমি নিজেও ছোটবেলায় একই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি। বল একটু দূরে গেলে পথচারীদের বিরক্তি, দোকানদারের বকুনি, এমনকি মাঝে মাঝে ঝামেলাও হতো। এখনকার বাচ্চারাও একই অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে দেখে খারাপই লাগে। ইনশাআল্লাহ, শহরের উন্নয়ন পরিকল্পনায় যদি ক্রীড়া সুবিধা বাড়ানোর দিকে আরো নজর দেওয়া হয়, তাহলে পরিবেশটা অনেক বদলে যাবে।
তারপরও অদম্য উৎসাহ নিয়ে খেলছে বলে আমাদের এলাকার ছেলেদের সামনে এগোনোর সুযোগ বাড়ছে। অনেকেই Pathao করে রাইড দিয়ে বা টিউশন করে নিজের ব্যাটিং গ্লাভস বা স্পাইক জোগাড় করে নিচ্ছে। এটি দেখলে আমার ভীষণ অনুপ্রেরণা লাগে। সম্প্রতি গত মাসে যখন বাংলাদেশ ফুটবল প্রিমিয়ার লিগ ২০২৪ ২৫ নিয়ে দেশজুড়ে ফুটবলের উত্তাপ ছিল, তখনও স্থানীয় ক্রিকেটের মাঠগুলো ফাঁকা পড়েনি। ফুটবল ট্রেন্ডের মাঝেও ক্রিকেটের প্রতি এই আগ্রহ আমাদের দেশের ক্রীড়া সংস্কৃতির গভীরতা বোঝায়।
আমি মনে করি, স্থানীয়ভাবে টুর্নামেন্ট আয়োজন বাড়ালে এবং ক্লাবগুলোকে সামান্য সহযোগিতা দিলে ক্রিকেটার তৈরির রাস্তা আরও মজবুত হবে। শুধু বড় ক্লাব বা বড় শহর নয়, খুলনার প্রান্তিক এলাকাও খুব ভালো প্রতিভা তৈরি করতে পারে। মাশাআল্লাহ, আমাদের এলাকায় কয়েকজন ছেলে ইতিমধ্যে জেলা স্তরে খেলার সুযোগ পেয়েছে। যদি সঠিক কোচিং আর সঠিক সুযোগ পাওয়া যায়, তাহলে ভবিষ্যতে আরও ভালো ক্রিকেটার উঠে আসবে নিশ্চয়ই।
সব মিলিয়ে বলতে গেলে, স্থানীয় ক্রিকেট এখনো আমাদের সমাজে আনন্দ, বন্ধুত্ব আর স্বপ্নের অন্যতম বড় উৎস। যত সমস্যা থাকুক, মানুষ খেলছে, দেখছে, শিখছে। এটিই সবচেয়ে বড় শক্তি। ইনশাআল্লাহ, আগামী দিনে খুলনা শহরই দেশকে আরও নতুন প্রতিভা উপহার দেবে ভাই।
Top comments (0)