Banglanet

তানজিলা হাসান
তানজিলা হাসান

Posted on

ময়মনসিংহে স্থানীয় ক্রিকেটে নতুন উচ্ছ্বাস, তরুণদের দারুণ অগ্রগতি

ময়মনসিংহে শীতের মৌসুম এলেই স্থানীয় ক্রিকেটের উত্তাপ যেন আরও বেড়ে যায়। সকালে কুয়াশার চাদর না সরতেই শহরের বিভিন্ন পাড়া ও মহল্লার মাঠে তরুণদের হুল্লোড় শুরু হয়ে যায়। আলহামদুলিল্লাহ, এ বছরের আয়োজনগুলো আগের চেয়ে আরও গুছানো এবং প্রতিযোগিতামূলক। বিশেষ করে গাঙ্গিনাপাড়ার মাঠ, সার্কিট হাউস এলাকার খোলা মাঠ আর কলেজপাড়ার লিগগুলোতে দর্শকদের ভিড় বেশ চোখে পড়ছে। পরিবারের সদস্যরা পর্যন্ত চা হাতে এসে খেলা দেখছেন, যা সত্যিই মাশাআল্লাহ এক সুন্দর দৃশ্য।

এই মৌসুমে কয়েকটি নতুন দলও যুক্ত হয়েছে। বিশেষ করে শহরের বাইরে গফরগাঁও ও ফুলপুর থেকে আগত স্কুল-কলেজ পড়ুয়া কয়েকটি দল দারুণ পারফরম্যান্স দেখাচ্ছে। তাদের ব্যাটিং-বোলিংয়ে যেভাবে উন্নতি দেখা যাচ্ছে, ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতে এখান থেকেই বড় মাপের খেলোয়াড় উঠে আসবে বলে অনেকে আশা করছেন। আমি নিজেও কয়েকদিন আগে আমার ছেলেকে নিয়ে প্যারাডাইস মোড়ের কাছের এক টুর্নামেন্ট দেখতে গিয়েছিলাম। ওখানে মাত্র ষোলো-সতেরো বছরের ছেলেদের খেলা দেখে সত্যি বলতে অবাক হয়ে গেলাম। তাদের শট সিলেকশন আর ফিল্ডিং দেখে মনে হচ্ছিল ইউটিউবে দেখা বড় ম্যাচগুলোর মতোই মান।

একজন অভিভাবক হিসেবে ভালো লাগছে যে তরুণরা এখন অনলাইন গেমে সময় নষ্ট না করে মাঠমুখী হচ্ছে। তবে সাথে সাথেই কিছু চ্যালেঞ্জও আছে। ময়মনসিংহ শহরে মানসম্মত অনুশীলনের সুযোগ এখনো সীমিত। ন্যাশনাল স্টেডিয়াম ছাড়া বেশিরভাগ মাঠেই সঠিক নেট প্র্যাকটিস বা পিচ প্রস্তুতির ব্যবস্থা নেই। অনেক সময় ছেলেদের নিজেরাই টাকা জোগাড় করে ইউনিফর্ম বা ক্রিকেট বল কিনতে হয়। স্থানীয় ক্লাবগুলো যদি একটু জোর দেয়, তাহলে এসব সমস্যার সমাধান সহজেই সম্ভব, ইনশাআল্লাহ।

জাতীয় দলের সাম্প্রতিক টি২০ সিরিজ জয়ও এখানকার তরুণদের অনুপ্রাণিত করেছে। আজ ১৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশের ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তৃতীয় টি২০তে ৮০ রানের বিশাল জয় এবং সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে সাফল্য স্থানীয় মাঠেও আলোচনার ঝড় তুলেছে। গত কয়েকদিন ধরেই ছেলেরা বলছিল, “ভাই, জাতীয় দল জিতলে আমরাও আরও জোরে অনুশীলন করব।” এই ধরনের ইতিবাচক মানসিকতা স্থানীয় ক্রিকেটকে আরও এগিয়ে নেবে বলে আমার বিশ্বাস।

সব মিলিয়ে ময়মনসিংহের ক্রিকেটে এই মৌসুমে নতুন প্রাণ এসেছে। সঠিক পরিকল্পনা, উপযুক্ত মাঠ ব্যবস্থাপনা আর তরুণদের আগ্রহ থাকলে এখান থেকেই ভবিষ্যতের তারকা জন্ম নিতে পারে। আল্লাহ চাইলে আগামী বছর আরও বড় আয়োজন ও উন্নত সুযোগ-সুবিধার প্রত্যাশা রইল।

Top comments (0)