ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন করা অনেক সময় আমাদের সমাজে একটু সংকোচের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়, কিন্তু আসলে বিষয়টি একদমই স্বাভাবিক। ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ এর এই দিনে বসে মনে হচ্ছিল, সাম্প্রতিক সময়ে তরুণদের মধ্যে ধর্মীয় জ্ঞান অর্জনের আগ্রহ আগের চেয়ে অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে, আলহামদুলিল্লাহ। বিশেষ করে মোহাম্মদপুর এলাকায় মসজিদভিত্তিক দারস, অনলাইন লেকচার এবং বিভিন্ন ইসলামি আলোচনায় তরুণদের অংশগ্রহণ সত্যিই মাশাআল্লাহ। তবে এর মাঝেও অনেক ভাইবোনের মনে নানা ধরনের প্রশ্ন থাকে, যা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা খুবই জরুরি।
আমার নিজের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, ছোটবেলা থেকেই অনেক ধর্মীয় বিষয় নিয়ে স্পষ্ট ধারণা ছিল না। যেমন নামাজের নিয়ত কিভাবে করবেন, রোজার সময় কোন কাজগুলো মাকরূহ, বা যাকাতের হিসাব কেমন হবে এসব নিয়ে বিভ্রান্তি ছিল। কিন্তু সময়ের সাথে বুঝেছি, সঠিক প্রশ্ন করাই শেখার প্রথম ধাপ। মাঝে মাঝে স্থানীয় মসজিদের ইমাম সাহেবের কাছে যেয়ে প্রশ্ন করতাম, আর তিনি খুব ধৈর্য নিয়ে ব্যাখ্যা করে দিতেন। এখন অনলাইনেও অনেক নির্ভরযোগ্য আলেমের প্রশ্নোত্তর সেশন থাকে, যেখানে সহজ ভাষায় সবকিছু ব্যাখ্যা করা হয়।
ধর্মীয় প্রশ্নোত্তরের আরেকটা বড় উপকারিতা হল ভুল ধারণা দূর হওয়া। উদাহরণ হিসেবে, কিছুদিন আগে এক বন্ধু মনে করত যে যেকোনো ধরনের সুদ সম্পর্কিত লেনদেন একই রকম কঠোর হুকুমের আওতায় পড়ে, কিন্তু পরে একজন আলেমের ব্যাখ্যার মাধ্যমে জানতে পারল বিষয়টির বিভিন্নতা আছে এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে আলাদা রুলিং রয়েছে। এমন আরও অনেক ভুল ধারণা সাধারণ আলোচনার মধ্য দিয়ে পরিষ্কার হয়ে যায়, ইনশাআল্লাহ।
ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, ধর্মীয় প্রশ্নোত্তরের আলোচনাকে স্বাভাবিক করার পাশাপাশি এর জন্য সঠিক পরিবেশ তৈরি করাও দরকার। পরিবার, বন্ধু বা অনলাইন ফোরাম যেখানেই হোক, প্রশ্ন করার জন্য একটি নিরাপদ ও সম্মানজনক পরিবেশ হওয়া উচিত। কেউ ধর্ম নিয়ে কিছু জানতে চাইলে তাকে লজ্জা দেওয়া বা ঠাট্টা করা ঠিক নয়। বরং উৎসাহ দেওয়া উচিত যাতে সে আরও বেশি শিখতে পারে এবং নিজের আমল উন্নত করতে পারে।
শেষে বলতে চাই, ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন শুধু ব্যক্তিগত দায়িত্ব না, এটি আত্মশুদ্ধির একটি সুন্দর পথ। আমাদের সবার উচিত নিয়মিতভাবে প্রশ্ন করা, খোঁজ নেওয়া এবং সঠিক উৎস থেকে জ্ঞান শেখা। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন এবং সত্য পথে চলার তাওফিক দান করুন, আমিন।
Top comments (0)