সিলেটের ভাই ও আপুরা, আজ ১৮ মে ২০২৫ অনুযায়ী অনেকে বিদেশে পড়াশোনা বা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলারশিপ নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাই ভাবলাম নিজের অভিজ্ঞতা আর সাম্প্রতিককালে যা দেখেছি, তার ভিত্তিতে কিছু বাস্তব টিপস শেয়ার করি। আলহামদুলিল্লাহ, আমি নিজেও আগেই কিছু আন্তর্জাতিক স্কলারশিপের জন্য আবেদন করেছিলাম, আর সেই প্রক্রিয়ার সময় অনেক বিষয় বুঝতে পেরেছি যেগুলো নতুনদের কাজে লাগতে পারে।
প্রথমত, স্কলারশিপ খোঁজার ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য উৎস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই Facebook গ্রুপে ভরসা করেন, কিন্তু সব তথ্য সেখানে সঠিক নাও হতে পারে। তার চেয়ে বরং সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারি ওয়েবসাইট, বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল স্কলারশিপ পেইজ, আর বিশ্বস্ত শিক্ষা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক পোর্টাল নিয়মিত চেক করা ভালো। উদাহরণ হিসেবে, যুক্তরাজ্য, কানাডা বা অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সাধারণত নতুন স্কলারশিপ ঘোষণার আগে তাদের ওয়েবসাইটেই আপডেট দেয়। এসব ওয়েবসাইটে নিয়মিত নজর রাখলে সুযোগ মিস হবে না ইনশাআল্লাহ।
দ্বিতীয়ত, আবেদনপত্র তৈরি করা অনেকের কাছে ঝামেলার মনে হলেও, ঠিকভাবে করলে সেটিই আপনার শক্তিশালী দিক হয়ে দাঁড়াতে পারে। নিজের স্টেটমেন্ট অব পারপাস তৈরির সময় শুধু তথ্য নয়, নিজের লক্ষ্য, কেন নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে পড়তে চান, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এগুলো পরিষ্কারভাবে লিখতে হয়। এখানে নিজের অভিজ্ঞতা বলি, আমি যখন প্রথমবার আবেদন করেছিলাম, তখন দীর্ঘ লিখে ফেলেছিলাম, ফলে মূল পয়েন্ট হারিয়ে যায়। পরে সংক্ষিপ্ত ও ফোকাসড করে লেখার পর দেখলাম ফল অনেক ভালো এসেছে। তাই অযথা গল্প না বাড়িয়ে পরিষ্কারভাবে নিজের উদ্দেশ্য তুলে ধরা খুব জরুরি।
তৃতীয়ত, রেফারেন্স বা সুপারিশপত্র অনেক বড় ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশে অনেক সময় শিক্ষকরা ব্যস্ত থাকেন, তাই আগে থেকেই তাদের জানিয়ে রাখলে তারা সুন্দরভাবে সময় নিয়ে সুপারিশপত্র লিখে দিতে পারেন। আমি নিজে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষককে আগে থেকেই অনুরোধ করেছিলাম, ফলে আবেদন করার সময় চাপ অনুভূত হয়নি। আর ভুলেও একই লেখা কপি করে বিভিন্ন স্কলারশিপে পাঠাবেন না, কারণ প্রত্যেক স্কলারশিপের লক্ষ্য আলাদা।
শেষে আরেকটি জরুরি টিপস হলো সময় ব্যবস্থাপনা। এখন অনেক স্কলারশিপে আবেদন অনলাইনে হয়, এবং কিছু ক্ষেত্রে ডকুমেন্ট আপলোড করতে সময় লাগে। তাই শেষ মুহূর্তে না করে আগে থেকেই পাসপোর্ট, ট্রান্সক্রিপ্ট, ইংরেজি দক্ষতার সার্টিফিকেটসহ সব কাগজপত্র প্রস্তুত রাখা ভালো। প্রযুক্তিগত সমস্যাও হতে পারে, বিশেষ করে যদি Grameenphone বা অন্যান্য সেবাদাতার নেটওয়ার্ক মাঝে মাঝে স্লো থাকে। তাই প্রস্তুতি আগে শেষ করলে সবকিছু অনেক সহজ হবে ইনশাআল্লাহ।
আশা করি এসব টিপস নতুনদের কাজে লাগবে। স্কলারশিপ পাওয়া কঠিন হলেও অসম্ভব কিছু নয়। ধৈর্য, পরিকল্পনা আর পরিশ্রম থাকলে ভাল ফল পাওয়া সম্ভব, মাশাআল্লাহ। যদি কেউ সিলেট থেকে আবেদন নিয়ে বিশেষ সাহায্য চান, মন্তব্যে জানাতে পারেন।
Top comments (0)