ঢাকায় সাম্প্রতিক সময়ে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনার মাত্রা চোখে পড়ার মতোভাবে বেড়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুত বাড়লেও বেশিরভাগ মানুষই এখনো ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষায় পুরোপুরি সচেতন নন। বিশেষ করে অনলাইন ব্যাংকিং, bKash লেনদেন এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনেকেই মৌলিক নিরাপত্তা প্রটোকল মানেন না। ফলে বিভিন্ন ধরনের ফিশিং আক্রমণ, অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং এবং ডেটা লিকের ঝুঁকি বেড়েই চলেছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বেশ কিছু ব্যবহারকারী তাদের Facebook ও email অ্যাকাউন্টে অননুমোদিত লগইনের অভিযোগ তুলেছেন।
আইটি বিশেষজ্ঞদের মতে, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় অতিরিক্ত বিনিয়োগ করতে হবে। বিশেষ করে ছোট এবং মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য সাইবার নিরাপত্তা এখন একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। অনেক কোম্পানি এখনো পুরোনো সফটওয়্যার ব্যবহার করছে, যেগুলোতে নিয়মিত আপডেট না থাকায় হ্যাকারদের আক্রমণের ঝুঁকি থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের জন্য সাইবার নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা উচিত, যাতে সবাই সন্দেহজনক লিংক বা অপরিচিত মেইল সম্পর্কে সতর্ক থাকতে পারেন।
মিরপুরে বসবাসকারী একজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হিসেবে আমিও সম্প্রতি একটি অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছি। আমার অনলাইন স্টোরের website প্রশাসনিক প্যানেলে অচেনা লগইন প্রচেষ্টার নোটিফিকেশন পাই। প্রথমে বিষয়টি তেমন গুরুত্ব না দিলেও পরে বুঝতে পারলাম পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করাটা জরুরি। আলহামদুলিল্লাহ, সময়মতো পদক্ষেপ নেওয়ায় বড় কোনো ক্ষতি হয়নি। ওই ঘটনার পর থেকে আমি দুই স্তরের যাচাইকরণ সক্রিয় করেছি এবং সফটওয়্যার আপডেট নিয়মিত করছি। অনেক ভাইয়ের মতো আমার কাছেও আগে এগুলো বাড়তি ঝামেলা মনে হতো, কিন্তু এখন বুঝছি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আসলে ব্যবসারই অংশ।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন যে সাধারণ ব্যবহারকারীদেরও কিছু সহজ নিয়ম মেনে চলা উচিত। যেমন শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা, অপরিচিত লিংকে ক্লিক না করা, নিয়মিত সিস্টেম আপডেট রাখা এবং যেকোনো অনলাইন লেনদেনের আগে উৎস যাচাই করা। ইনশাআল্লাহ এসব অভ্যাস ধীরে ধীরে বাড়লে দেশে সাইবার হুমকির ঝুঁকি অনেকটাই কমে আসবে। প্রযুক্তির এই যুগে নিরাপত্তা শুধু বড় প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নয় বরং প্রতিটি নাগরিকের নিজেদের তথ্য সুরক্ষার প্রতি সচেতন হওয়াই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
Top comments (0)