Banglanet

বাংলাদেশে ওয়েব সিরিজের জনপ্রিয়তা ও আমাদের দেখার অভ্যাস

বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে ওয়েব সিরিজ দেখার প্রবণতা সত্যিই বেশ বেড়ে গেছে। বিশেষ করে ঢাকা, খুলনা, চট্টগ্রামসহ দেশের বড় শহরগুলোতে এখন অনেকেই কাজের ফাঁকে অথবা ছুটির দিনে নিজের পছন্দের সিরিজ দেখেন। আমি নিজেও খুলনা সিটির একজন সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে সপ্তাহের কর্মব্যস্ততার পর রাতে একটু সময় বের করে কয়েকটা এপিসোড দেখে নেওয়া উপভোগ করি। এক দিক থেকে এটি মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে, আলহামদুলিল্লাহ। তবে যেটা লক্ষ্য করি, আমরা অনেকেই এখন আর শুধু টিভি চ্যানেলের ওপর নির্ভর করি না। বরং বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এখন বিনোদনের নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।

গত মাসে একুশে বইমেলা ২০২৫ চলাকালীন অনেক প্রকাশনী তাদের নতুন বইয়ের পাশাপাশি ওয়েব সিরিজ ভিত্তিক গল্প বা চিত্রনাট্যও তাদের স্টলে রেখেছিল। বইমেলায় ঘুরতে গিয়ে দেখলাম তরুণদের মধ্যে এই নতুন ট্রেন্ড নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে। অনেকে বলছিল যে, একটি ভালো ওয়েব সিরিজ পুরোপুরি একটি বইয়ের মতোই চরিত্রগঠনের জগতে নিয়ে যেতে পারে। বিষয়টা শুনে আমারও ভালো লেগেছে, কারণ গল্প যদি ভালো হয়, মাধ্যম যাই হোক, দর্শককে টানবেই।

একই সময়ে গত সপ্তাহে মুক্তি পাওয়া শাকিব খানের ছবি ‘অন্তরাত্মা’ দেখার অভিজ্ঞতাটাও এই আলোচনায় যুক্ত করা যায়। সিনেমাটি দেখে মনে হলো, আমাদের দেশের বিনোদন শিল্প এখন গল্প বলার ধরনকে আরও আধুনিকভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। ওয়েব সিরিজে যে ধরণের ভিজ্যুয়াল স্টাইল দেখা যায়, সিনেমাতেও তার ছাপ ধীরে ধীরে আসছে। ফলে দর্শকের প্রত্যাশাও বাড়ছে, আর নির্মাতারাও সেই প্রত্যাশা পূরণের চেষ্টা করছেন, ইনশাআল্লাহ সামনে আরও ভালো কিছু পাব।

আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয় যে, ওয়েব সিরিজের জনপ্রিয়তা বাড়ার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হলো বিষয়বস্তুর বৈচিত্র্য। কেউ থ্রিলার পছন্দ করে, কেউ রোমান্স, কেউ আবার সাসপেন্স–সব ধরনের দর্শকের জন্যই এখন কিছু না কিছু আছে। অফিস থেকে ফেরার পথে Pathao কিংবা বাসে বসে মোবাইলে সিরিজ দেখার সুবিধাও জনপ্রিয়তায় বাড়তি ভূমিকা রাখছে। তবে অবশ্যই আমাদের সচেতন থাকতে হবে কোন ধরনের কনটেন্ট দেখা উপযুক্ত এবং কোনটা নয়। বিশেষ করে পরিবারে ছোটরা থাকলে ফিল্টার করা খুবই জরুরি। আশা করি দেশের ওয়েব প্ল্যাটফর্মগুলো আরও মানসম্মত কাজ করবে এবং আমাদের বিনোদন জগতকে আরও সমৃদ্ধ করবে।

Top comments (0)