Banglanet

রাসেল বেগম
রাসেল বেগম

Posted on

দুর্নীতি প্রতিরোধে বাস্তব পরিবর্তনের পথ কোথায়

বাংলাদেশে দুর্নীতি প্রতিরোধ নিয়ে আলোচনা করতে গেলেই অনেকের দৃষ্টিভঙ্গি থাকে শুধু রাজনৈতিক বক্তব্যের মধ্যে আটকে। কিন্তু আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলে, বিষয়টি আসলে আরও গভীর। বনানীতে সরকারি দপ্তরে কাজ করতে গিয়ে আমি দেখেছি, অনেক সময় দুর্নীতি শুধু বড় বড় প্রকল্পের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং ছোটখাটো প্রশাসনিক কাজেও এর প্রভাব পড়ে। এই অভ্যাসবদ্ধ কাঠামো ভাঙতে হলে শুধু আইন নয়, মানসিকতারও বড় পরিবর্তন দরকার।

আজকাল সরকারি প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে। আলহামদুলিল্লাহ, কিছু ক্ষেত্রে এর ইতিবাচক প্রভাবও দেখা যায়। উদাহরণ হিসেবে, অনলাইন ফাইল ট্র্যাকিং বা ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা কিছুটা হলেও স্পষ্ট হয়েছে। কিন্তু তবুও অনেক জায়গায় পুরোনো মানসিকতা এখনো রয়েছে, যা স্বচ্ছ প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়। আমার নিজের অফিসেই দেখেছি, কোনও কোন ভাই বা চাচা ডিজিটাল পদ্ধতিকে ঝামেলা মনে করে পুরোনো পদ্ধতিই চালিয়ে যেতে চান, আর ঠিক এখানেই দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হয়।

আমার মতে, দুর্নীতি প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে জবাবদিহিতা এবং উন্মুক্ত তথ্য ব্যবস্থা। সাধারণ নাগরিকের কাছে তথ্য সহজলভ্য হলে এবং প্রতিটি প্রক্রিয়ার অগ্রগতি অনলাইনে দেখা গেলে অনেক ভিন্ন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। সরকারি কর্মচারী হিসেবে আমি মনে করি, আমাদেরও নিজেদের আচরণে স্বচ্ছতা বজায় রাখা জরুরি। ইনশাআল্লাহ, যদি প্রত্যেক অফিসেই কাজের তালিকা, সময়সূচি এবং দায়িত্ব স্পষ্টভাবে প্রকাশ করা হয়, তাহলে অনাকাঙ্ক্ষিত প্রভাব বা চাপ দেওয়ার প্রবণতা কমবে।

একই সাথে নাগরিকদের অংশগ্রহণও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঢাকা শহরে, বিশেষ করে বনানী বা গুলশান অঞ্চলে, আমি প্রায়ই দেখি মানুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে, কিন্তু প্রক্রিয়াগত কিছু জায়গায় নিজেরাই শর্টকাট খোঁজে। এই সংস্কৃতি বদলানো সহজ নয়, কিন্তু অসম্ভবও নয়। যদি আমরা প্রত্যেকে নিজের জায়গা থেকে নৈতিকতা বজায় রাখি, আর তরুণ প্রজন্মকে স্বচ্ছতা শেখাই, তাহলে ভবিষ্যতে আরও দৃঢ় পরিবর্তন দেখা যাবে ইনশাআল্লাহ।

শেষে বলতে চাই, দুর্নীতি প্রতিরোধ কোনও এক দিনের কাজ নয়। এটি দীর্ঘমেয়াদি প্রচেষ্টা। রাজনৈতিক সদিচ্ছা, প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা, নাগরিক সচেতনতা এবং প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে একটি টেকসই ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব। আমাদের উচিত নিজেরাই প্রথম পরিবর্তনের উদাহরণ তৈরি করা, যাতে অন্যরাও অনুপ্রাণিত হয়। মাশাআল্লাহ, সময় বদলাচ্ছে, মানুষের প্রত্যাশাও বাড়ছে। এখন শুধু সঠিক দিকনির্দেশনা আর দৃঢ় সিদ্ধান্তের অপেক্ষা।

Top comments (0)