বিয়ে এমন একটি পথ যেখানে দুজন মানুষ শুধু সম্পর্কই নয়, একে অপরের স্বপ্ন, দায়িত্ব এবং মানসিকতা ভাগাভাগি করে এগিয়ে যায়। আমাদের সমাজে প্রায়ই বলা হয় বিয়ের পর সবকিছুই নতুনভাবে শুরু হয়, আর তা সত্যিই ঠিক। ফরিদপুরে আমাদের এলাকাতেও দেখেছি, পরিবার এবং সামাজিক চাপের মাঝে নতুন দম্পতিরা অনেক সময় ছোট ছোট ভুল বোঝাবুঝিতে হিমশিম খায়। তাই আজ কিছু অভিজ্ঞতা থেকে কয়েকটা পরামর্শ শেয়ার করছি, আলহামদুলিল্লাহ এগুলো অনেকের কাজে লেগেছে।
প্রথমত, যোগাযোগ সবকিছুর মূল। আপনি বা আপনার সঙ্গী যদি নিজের অনুভূতি লুকিয়ে রাখেন, তাহলে সম্পর্কের ভিত নড়বড়ে হয়ে যায়। উদাহরণ হিসেবে, এক বন্ধুর কথা বলি যে মিরপুরে থাকে। বিয়ের প্রথম বছর দুজনেই ব্যস্ত ছিল, কিন্তু কথা না বলার কারণে ছোট বিষয় বড় হয়ে গিয়েছিল। পরে দুজন নিয়ম করে প্রতিদিন অন্তত ১৫ মিনিট মন খুলে কথা বলা শুরু করলো। মাশাআল্লাহ এখন তাদের সম্পর্কে অনেক শান্তি। নিজের সঙ্গীর সাথে কথা বলার অভ্যাস রাখলে ভুল বোঝাবুঝি কমে আর বিশ্বাস বাড়ে।
দ্বিতীয়ত, ঘরের দায়িত্ব ভাগাভাগি করা খুবই জরুরি। এখনকার দিনে চাকরি, পরিবার সামলানো, বাইরে দৌড়াদৌড়ি সবই দুজনের উপরই পড়ে। তাই কে কী করবে তা নিয়ে রাগারাগি না করে, বরং দুজন মিলে পরিকল্পনা করলে জীবন সহজ হয়। আমি নিজের ক্ষেত্রেই দেখেছি, কাজ থেকে ফিরেই যদি সব দায়িত্ব একজনের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে সে শুধু ক্লান্ত নয় মানসিকভাবেও চাপ অনুভব করে। একটু চা বানিয়ে দেওয়া বা বাজারের ছোট কাজটা করে দেওয়াও বড় উপকার করে।
তৃতীয়ত, দাম্পত্য জীবনে সম্মান এবং ধৈর্য সবচেয়ে বড় শক্তি। সম্পর্ক কখনোই পারফেক্ট হয় না, কিন্তু সম্মানের সাথে কথা বলা, রাগ কম দেখানো এবং ক্ষমা করতে শেখা সম্পর্ককে সুন্দর রাখে। যেসব দম্পতি খোলামেলা আচরণ করে এবং একে অপরের সীমাবদ্ধতা বুঝে এগিয়ে যায়, তাদের জীবন অনেক বেশি সুখী হয়। ইনশাআল্লাহ সম্পর্কের প্রতি যতটা বিনিয়োগ করবেন, ততটাই ভালো ফল পাবেন।
শেষে বলতে চাই, বিয়ে কোন যুদ্ধক্ষেত্র নয়, এটা দুজন মানুষের একসাথে বেড়ে ওঠার জায়গা। আপনার সঙ্গীকে বন্ধু ভাবুন, জীবনসঙ্গী হিসেবে সম্মান দিন, এবং পরিবারের চাপ বা সামাজিক তুলনা মাথায় না এনে নিজেরা নিজের মতো করে সম্পর্ক গড়ে তুলুন। আলহামদুলিল্লাহ, এভাবেই দাম্পত্য জীবন সুন্দর হয়ে ওঠে। আশা করি এই পরামর্শগুলো কারও না কারও উপকারে আসবে। 🌿
Top comments (0)