গর্ভাবস্থা একজন নারীর জীবনে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়, আর এই সময়ে সঠিক যত্ন নেওয়া ইনশাআল্লাহ মা ও শিশুর সুস্থতার জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। সাম্প্রতিক সময়ে পরিচিত কয়েকজন আপার অভিজ্ঞতা দেখে বুঝেছি, নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং নিজের দৈনন্দিন অভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনা কত বড় ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে প্রথম তিন মাসে বমি বমি ভাব, ক্লান্তি ও মনোযোগে ব্যাঘাত হওয়া স্বাভাবিক হলেও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, কারণ এই সময়েই শরীর নতুন পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে শুরু করে।
ঢাকায় চাকরি করার কারণে বেশ চাপের মধ্যে থাকা অনেক মা আছেন। আমার এক সহকর্মী আপা মিরপুরে থাকেন, তিনি প্রথম দিকে কাজে অতিরিক্ত দৌড়ঝাঁপের কারণে বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন। পরে চিকিৎসক পরামর্শ দিলে তিনি অফিসের কাজ কিছুটা কমিয়ে দেন এবং যথাসময়ে বিশ্রাম নিতে শুরু করেন। আলহামদুলিল্লাহ কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তার অবস্থা অনেক ভালো হয়। তার অভিজ্ঞতা দেখে বুঝেছি, পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম গর্ভাবস্থার যত্নের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোর একটি।
পুষ্টিকর খাবার খাওয়াও এই সময়ে খুব জরুরি। আমার এক আত্মীয়া ধানমন্ডিতে থাকেন, তিনি গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন সামান্য পরিমাণ করে ফল, শাকসবজি, ডাল, ডিম ও মাছ খেতেন। বিশেষ করে ইলিশ বা অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার খুব বেশি খেতেন না, বরং হালকা খিচুড়ি, স্যুপ বা ভাতের সাথে সবজি খেতেন। এতে তার হজমও ভালো ছিল এবং ক্লান্তিও কম হতো। সঠিক খাবারের পরিমাণ ও মান শিশুর সঠিক বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখে, এটা তার অভিজ্ঞতা থেকেই বুঝা যায়।
এছাড়া নিয়মিত হালকা ব্যায়াম গর্ভবতী মায়েদের জন্য খুবই উপকারী। অনেকেই ভুল করে বেশি ব্যায়াম করতে চান, কিন্তু আসলে প্রতিদিন সামান্য হাঁটা বা হালকা স্ট্রেচিং করলেই যথেষ্ট। আমার আরেক প্রতিবেশী আপা প্রতিদিন সন্ধ্যায় সামান্য হাঁটতেন এবং এতে তার রক্তচাপ, মানসিক চাপ ও ঘুমের মান সবকিছুই ভালো ছিল। মাশাআল্লাহ তার সন্তানও সুস্থ জন্মেছিল। 😊
সবশেষে বলবো, গর্ভাবস্থার সময় সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো নিয়মিত চেকআপ, মানসিক প্রশান্তি ও পরিবারের সমর্থন। সঠিক সময়ে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া, প্রয়োজনে পরীক্ষা করানো এবং নিজের শরীরের প্রতিটি পরিবর্তনকে গুরুত্ব দেওয়া ইনশাআল্লাহ মা ও শিশুর সুস্থতার সম্ভাবনা বাড়ায়। ঢাকার ব্যস্ত জীবনে এসব মানা কিছুটা কঠিন হলেও একটু সচেতন হলে সবই সম্ভব। সকল গর্ভবতী মায়ের জন্য শুভকামনা রইল।
Top comments (0)