Banglanet

মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা ও নিজের অভিজ্ঞতা

চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকায় থাকি বলে চারপাশে কাজের চাপ, যানজট, পরিবারিক দায়িত্ব সব মিলিয়ে মানসিক চাপ যেন দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে গেছে। অনেক সময় মনে হয় আমরা শারীরিক অসুস্থতাকে গুরুত্ব দিই, কিন্তু মানসিক অসুস্থতাকে নিয়ে লজ্জা পাই। অথচ মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক না থাকলে জীবনের অন্য কোনও দিকই ঠিকভাবে এগোয় না। তাই মনে করি এখন সময় এসেছে এই বিষয়টা নিয়ে আরও খোলামেলা কথা বলার। আলহামদুলিল্লাহ, মানুষ এখন আগের চেয়ে বেশি সচেতন হচ্ছে, তবে আরও পথ বাকি।

গত কয়েক মাসে নিজের মধ্যেও কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি। কাজের চাপ, রাতে ঠিকভাবে ঘুম না হওয়া, আর দিনের শেষে সবকিছু মিলিয়ে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হচ্ছিল। প্রথমে ভাবতাম এটা হয়তো স্বাভাবিক, কিন্তু একদিন উপলব্ধি করলাম যে এই অনুভূতিগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চললে মানসিক ক্লান্তি বাড়তেই থাকে। তখন একজন বন্ধুর পরামর্শে কিছু ছোট ছোট পরিবর্তন আনার চেষ্টা করলাম। যেমন রাতে মোবাইল কম ব্যবহার করা, দিনে অন্তত আধা ঘণ্টা হাঁটা, আর সময় পেলে চা নিয়ে বারান্দায় একটু শান্তভাবে বসা। মাশাআল্লাহ, এগুলো সত্যিই কাজে দিয়েছে।

আগ্রাবাদের আশেপাশে এখন বেশ কিছু মানসিক স্বাস্থ্য পরামর্শ সেবা পাওয়া যায়, এবং চাইলে অনলাইনেও বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলা যায়। অনেক ভাই ভাবেন যে কাউন্সেলিং নিলে মানুষ কী ভাববে, কিন্তু সত্যি কথা হচ্ছে এটা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক একটি বিষয়। যেমন আমরা অসুস্থ হলে ডাক্তার দেখাই, তেমনি মন খারাপ থাকলে বা দীর্ঘদিন ধরে চাপ অনুভব করলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া কোন লজ্জার ব্যাপার নয়। বরং এটা নিজের প্রতি দায়িত্ব পালন করা। ইনশাআল্লাহ, সমাজে এই মানসিকতা আরও বাড়বে।

মানসিক স্বাস্থ্য শক্তিশালী রাখতে পরিবার ও বন্ধুদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় এক কাপ চা, একটুখানি কথা, বা কারও কাছে নিজের মন খুলে বলা অবিশ্বাস্যভাবে সাহায্য করতে পারে। তাই যদি কখনও কারও মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ্য করেন, তাকে বিচার না করে পাশে দাঁড়ানোই সবচেয়ে বড় সহায়তা। আমরাও নিজের দিক থেকে চেষ্টা করতে পারি সপ্তাহে একদিন পরিবার নিয়ে আরাম করে বসা, বাসায় হাসাহাসি করা, কিংবা একটু বাইরে হাঁটতে যাওয়া। এসব ছোট ছোট অভ্যাস মানসিক সুস্থতার জন্য খুবই কার্যকর।

সবশেষে বলতে চাই, মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলা দুর্বলতার নয়, সচেতনতার লক্ষণ। নিজের প্রতি দয়া দেখানো, বিশ্রাম নেওয়া, প্রয়োজন হলে সাহায্য চাওয়া সবই খুব স্বাভাবিক বিষয়। আলহামদুলিল্লাহ, আমরা ধীরে ধীরে এগোচ্ছি এবং ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতে আরও স্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হবে যেখানে সবাই মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে খোলামেলা কথা বলতে পারবে। 😊

Top comments (0)