Banglanet

স্থানীয় নির্বাচনে জনগণের প্রত্যাশা আর বাস্তবতার ফারাক

রাজশাহী সিটির একজন সাধারণ ভোটার হিসেবে স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে আমার ভাবনা সব সময়ই একটু মিশ্র অনুভূতির। একদিকে আশা থাকে যে নতুন নেতৃত্ব এলে এলাকার রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ, পানি আর নিরাপত্তার ব্যবস্থা আরও ভালো হবে। অন্যদিকে বাস্তবে অনেক সময় দেখি নির্বাচনের আগে প্রচার আর প্রতিশ্রুতি বেশ জোরালো হলেও ভোটের পরে সেই গতি আগের মতো থাকে না। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন এলাকায় যেভাবে স্থানীয় সরকার নিয়ে আলোচনা বাড়ছে, তা দেখে মনে হয় মানুষ এখন আগের চেয়ে বেশি সচেতন হচ্ছেন, আলহামদুলিল্লাহ।

ব্যক্তিগতভাবে আমি দেখেছি যে রাজশাহীর অনেক ওয়ার্ডে এখনও মৌলিক সেবার ঘাটতি রয়েছে। বৃষ্টি হলেই কিছু এলাকায় পানি জমে থাকে, ডাস্টবিনের অভাব, রাস্তার আলো ঠিকমতো কাজ না করা এগুলো এখনো সাধারণ সমস্যা। নির্বাচন এলে প্রার্থীরা এলাকার চা দোকানে বসে মানুষের খোঁজখবর নেন, প্রতিশ্রুতিও দেন। কিন্তু নির্বাচন শেষ হওয়ার কিছুদিন পরেই সেই আন্তরিক যোগাযোগ কমে যায়। আমার মনে হয় স্থানীয় নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর প্রার্থীদের উচিত জনগণের সঙ্গে নিয়মিত বসা আর উন্নয়নের কাজগুলো স্বচ্ছভাবে তুলে ধরা। এতে আস্থা বাড়ে, ইনশাআল্লাহ কাজের গতি ও মানও ভালো থাকে।

আরেকটা বিষয় হলো রাজনৈতিক সংস্কৃতি। আমাদের দেশে অনেক সময় দলীয় প্রতীক আর কেন্দ্রীয় রাজনীতির প্রভাব স্থানীয় নির্বাচনেও খুব বেশি দেখা যায়। অথচ স্থানীয় সরকারের মূল শক্তি হওয়া উচিত এলাকাভিত্তিক সমস্যা, উন্নয়ন পরিকল্পনা আর কমিউনিটির চাহিদা। আজকাল অনেক তরুণ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন, মাশাআল্লাহ এটা ভালো দিক। তবে তাদের জন্যও দরকার প্রশিক্ষণ, সঠিক দৃষ্টি আর সেবা মনোভাব। মানুষের দরজা ধাক্কা মেরে শুধু ভোট চাওয়া যথেষ্ট না, মানুষের সমস্যার সমাধান করতে হবে।

আমি বিশ্বাস করি, সৎ নেতৃত্ব আর জবাবদিহিতা থাকলে স্থানীয় সরকারই দেশের উন্নয়নের সবচেয়ে বড় চালিকা শক্তি হতে পারে। রাজশাহীর মানুষ খুব শান্ত স্বভাবের, পরিশ্রমী এবং বাস্তবভিত্তিক। তারা শুধু চান যে যারা নির্বাচিত হবেন তারা যেন কথার চেয়ে কাজ বেশি করেন। ভবিষ্যতের নির্বাচনগুলোতে যদি প্রার্থীরা জনগণের এই প্রত্যাশা বুঝে কাজ করেন, তাহলে স্থানীয় উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হবে, ইনশাআল্লাহ।

Top comments (0)