বিনিয়োগ নিয়ে আজকাল অনেক শিক্ষার্থীই চিন্তা করছে, বিশেষ করে ঢাকার গুলশান বা ধানমন্ডি এলাকার তরুণরা নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশ সচেতন। আমিও ব্যক্তিগতভাবে এইচএসসি শেষ করার পর প্রথম দিকে ছোটখাটো সঞ্চয় কোথায় রাখবো তা নিয়ে বেশ দ্বিধায় ছিলাম। কোন খাতে ঝুঁকি কম, কোন খাতে রিটার্ন একটু ভালো হতে পারে এসব নিয়ে ইউটিউব ভিডিও দেখে মাথা আরও বেশি গুলিয়ে যেত। তাই ধীরে ধীরে বুঝলাম যে বাজার সম্পর্কে নিজের জ্ঞান বৃদ্ধি না করে বিনিয়োগ করা মানে অন্ধকারে তীর ছোড়ার মতো।
বাংলাদেশে আজকাল সাধারণ মানুষ যে তিনটা জায়গায় সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেখায় তা হলো সেভিংস স্কিম, মিউচুয়াল ফান্ড আর স্টক মার্কেট। সেভিংস স্কিম তুলনামুলকভাবে ঝুঁকিহীন হলেও রিটার্ন একটু ধীর। নতুনদের জন্য এটা ভালো শুরু হতে পারে। অন্যদিকে মিউচুয়াল ফান্ডে পেশাদাররা পোর্টফোলিও ম্যানেজ করে বলেই ঝুঁকি কিছুটা কমে যায়। ইনশাআল্লাহ দীর্ঘমেয়াদে রাখতে পারলে এখান থেকেও ভালো লাভ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আমি নিজে একবার একটি ছোট মিউচুয়াল ফান্ডে অল্প কিছু টাকা রেখেছিলাম এবং কয়েক মাস পরে দেখলাম স্থির গতিতে বাড়ছে দেখে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়।
স্টক মার্কেট অবশ্যই বেশি ঝুঁকিপূর্ণ, কিন্তু সম্ভাবনাও বেশি। অনেকেই শেয়ার কিনে দাম ওঠা নামা দেখে হতাশ হয়ে বিক্রি করে দেয়। এই ভুলটা আমিও প্রথম দিকে করেছিলাম। পরে বুঝেছি যে শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করতে হলে কোম্পানির ভিত্তি, আর্থিক প্রতিবেদন, বাজার প্রবণতা এসব বিশ্লেষণ করতে হয়। শুধু কারও কথায় শেয়ার কেনা ঠিক না। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাধারণ আপডেট দেখলে বোঝা যায় যে বাজারে ওঠানামা সবসময়ই থাকবে। তাই দীর্ঘমেয়াদী মানসিকতা খুব দরকার।
সবশেষে একটা বিষয় পরিষ্কার করে বলা দরকার যে বিনিয়োগ মানেই দ্রুত ধনী হওয়া না। বরং ধীরে ধীরে স্থিরভাবে এগোনোর কৌশল শেখা। নিজের সঞ্চয় নিয়ে আবেগে না গিয়ে ধৈর্য ধরে তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত নিলে ভুলের সুযোগ কমে যায়। আলহামদুলিল্লাহ আমাদের প্রজন্ম অনলাইনে শেখার এত সুযোগ পাচ্ছে যে ইচ্ছা থাকলে ঘরে বসেই অনেক কিছু শিখে নেওয়া যায়। তাই ভাইরা, বিনিয়োগ করতে চাইলে আগে জ্ঞান অর্জন করুন, ছোট থেকে শুরু করুন আর রেগুলার সেভিংস এর অভ্যাস গড়ে তুলুন। মাশাআল্লাহ এগুলোই ভবিষ্যতে বড় সুবিধা দেবে।
Top comments (0)