৬ আগস্ট ২০২৫, প্রবাসে বসে আজকে মনে হলো ভাইদের সাথে আমার সাম্প্রতিক একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। আলহামদুলিল্লাহ, কয়েক বছর ধরে আমি মধ্যপ্রাচ্যে কাজ করছি। এখানে কাজের চাপ, ঘরের টান আর একাকীত্বের মাঝেও ধর্মীয় আলোচনা আমাকে অনেক শান্তি দেয়। বিশেষ করে শুক্রবারের ছুটির দিনে আমাদের ব্যাচের কয়েকজন বাংলাদেশি ভাই মিলে ছোট্ট এক বৈঠক করি। মাশাআল্লাহ, সেই বৈঠক থেকেই আমার ধর্মীয় প্রশ্নোত্তরের প্রতি আগ্রহ আরও বাড়ে।
সত্যি বলতে কি ভাই, প্রবাসে থেকে অনেক সময় এমন কিছু প্রশ্ন আসে যা আগে কখনও মাথায় আনিনি। যেমন, এখানে বিভিন্ন দেশের মুসলমানদের সাথে নামাজে দাঁড়ালে ইমামের অনুসরণ নিয়ে কিছু ভিন্ন মত দেখি। আবার রোজার সময় সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি দেশভেদে একটু আলাদা থাকে। এসব নিয়ে প্রথমে একটু বিভ্রান্ত লাগলেও, পরে আমাদের বাংলাদেশি ইমাম সাহেব সব সুন্দরভাবে বুঝিয়ে বলেন যে মূল বিষয় নিয়ত ঠিক রাখা এবং সুন্নাহ অনুযায়ী কাজ করা। তিনি সবসময় বলেন, ইনশাআল্লাহ যে কেউ জ্ঞান খুঁজলে আল্লাহ পথ দেখান।
একদিন কাজ শেষে আমাদের বাসায় তিনজন ভাই এসে আলোচনা শুরু করলেন জাকাত নিয়ে। বিশেষ করে প্রবাসে আয় করা টাকার হিসাব কীভাবে করা উচিত, পরিবারে পাঠানো টাকাও কি হিসাবের মধ্যে পড়বে, এসব নিয়ে কথা হলো। আগে আমি খুব একটা গুরুত্ব দিতাম না, কিন্তু তারা বললেন যে সামান্য হিসাব-নিকাশ করলেই বিষয়টা পরিষ্কার হয়। সেইদিন নিজের ভয় আর লজ্জা কাটিয়ে আমি আমার সব প্রশ্ন খুলে বললাম। আলহামদুলিল্লাহ, তারা খুব আন্তরিকভাবে সব ব্যাখ্যা করলেন।
আরেকটি বিষয় প্রবাসে খুব বেশি দেখা যায়, তা হলো অনলাইনে বিভিন্ন ফতোয়া ঘাঁটাঘাঁটি করা। অনেক ভাই হয়তো YouTube বা Facebook ভিডিও দেখে বিভ্রান্ত হয়ে যান। আমিও প্রথমদিকে এমন ছিলাম। পরে শিখেছি যে বিশ্বস্ত আলেম ও নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জ্ঞান নেওয়াই উত্তম। তাই এখন যেকোনো বিষয় নিয়ে সন্দেহ হলে আমরা ছোট্ট গ্রুপে আলোচনা করি, তারপর প্রয়োজনে বাংলাদেশে আমাদের স্থানীয় মসজিদের হুজুরকে ফোনে জিজ্ঞেস করি।
সব মিলিয়ে বলতে গেলে, প্রবাস জীবনে ধর্মীয় প্রশ্নোত্তর শুধু জ্ঞান বাড়ায় না, আমাদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বও বেশি দৃঢ় করে। দিনশেষে মনে হয়, আল্লাহ আমাদের এই দূর দেশে পাঠিয়েছেন শুধু উপার্জনের জন্য নয়, বরং একে অপরকে সহযোগিতা করার জন্যও। ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতেও এমন আলোচনা চালিয়ে যেতে চাই, হয়তো আরও অনেকে উপকৃত হবেন।
Top comments (0)