Banglanet

পারিবারিক মান-সম্মান আর প্রেমের টানাপোড়েন

রাজশাহীতে সরকারী চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে জীবনটা মোটামুটি শান্তভাবেই চলছিল। কিন্তু গত এক বছরে প্রেমের সম্পর্কটা সিরিয়াস হয়ে ওঠার পর পরিবারে অনেক দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। আমি ভেবেছিলাম বাড়ির সবাই মেনে নেবে, বিশেষ করে মা সবসময় আমাকে সমর্থন করেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল বিষয়টা এত সহজ না। আলহামদুলিল্লাহ, দুজনেই ভালোভাবে ক্যারিয়ার নিয়ে এগোচ্ছি, তবুও পরিবারে কিছু পুরনো ধারণা এখনো শক্তভাবেই রয়ে গেছে।

আমার প্রেমিকা ঢাকার মিরপুরে থাকে, পড়াশোনা শেষ করে এখন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে। আমাদের পরিচয় হয়েছিল এক আত্মীয়ের মাধ্যমে, সবকিছুই স্বাভাবিকভাবে এগোচ্ছিল। কিন্তু বিয়ের প্রসঙ্গ আসতেই বাড়ির কিছু সদস্য আপত্তি জানানো শুরু করলেন। তারা বলছেন, দূরের মেয়ে মানিয়ে নিতে পারবে না, আবার কেউ বলছে চাকরিজীবী মেয়ে হলে নাকি সংসারের প্রতি মনোযোগ কম থাকে। আমি এসব শুনে অবাক হয়েছি, কারণ আজকের দিনে এমন চিন্তা এখনো মানুষের মধ্যে আছে দেখে সত্যিই মন খারাপ লাগে।

ঢাকায় কয়েকবার দেখা করতে গিয়ে বুঝেছি, মেয়েটি সত্যিই পরিবারকে গুরুত্ব দেয় এবং সম্পর্কটাকে সম্মানের সাথে এগিয়ে নিতে চায়। মেয়েটি নিজেও বলেছে, ইনশাআল্লাহ বিয়ের পর রাজশাহীতে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে। কিন্তু পরিবারকে কীভাবে বোঝাবো, সেটাই বড় প্রশ্ন। বিশেষ করে চাচারা যে ধরনের মন্তব্য করছেন, তা মানসিকভাবেও চাপ তৈরি করছে। মনে হচ্ছে দুপাশের কথা শুনতে শুনতে মাঝে আমিই চেপে যাচ্ছি।

সম্প্রতি এক আত্মীয় পরামর্শ দিলেন যে, পরিবারের বড় কারো মাধ্যমে দুপক্ষের আলাপ করালে সমাধান আসতে পারে। ধারণাটা মন্দ না। আমি ভাবছি এপ্রিলের শুরুতে মা-বাবাকে নিয়ে ঢাকায় একবার মেয়ের বাসায় যাই। হয়তো সামনাসামনি দেখা হলে ভুল বোঝাবুঝি কমে যাবে। সম্পর্কটা এতদূর আসার পর ভেঙে দেওয়া অন্যায় হবে, সেটা পরিবারও বুঝবে আশা করি।

এখন মনটা একটু ভারীই আছে, তবুও আশা হারাইনি। মাশাআল্লাহ, আমাদের দুজনেরই ইচ্ছা শক্ত। আল্লাহ চাইলে সব ঠিকভাবেই এগোবে ইনশাআল্লাহ। ভাইরা, আপনারা কেউ যদি এ ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়ে থাকেন, কিছু পরামর্শ দিলে উপকার পেতাম 🙂

Top comments (0)