ঢাকার জীবনে প্রেম আর বিয়ের বিষয়টা আজকাল একটু বেশি চাপের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে মনে হয়। আমি নিজেও সম্প্রতি এমন কিছু ঘটনায় পড়েছি যেখানে পরিবারের প্রত্যাশা আর নিজের মন দুটোর মাঝে ভারসাম্য রাখা খুব কঠিন হয়ে পড়েছিল। বিশেষ করে আমাদের সমাজে এখনও পরিবার ভাবেন যে বিয়ে মানে শুধুই তাদের সিদ্ধান্ত, আর ছেলে মেয়ের অনুভূতি বা মানসিক প্রস্তুতির বিষয়টা সেভাবে গুরুত্ব পায় না। আলহামদুলিল্লাহ, অনেক পরিবার এখন বদলাচ্ছে, কিন্তু সবার ক্ষেত্রে তা হচ্ছে না।
আমার এক কাজিনের উদাহরণ দিই। ওর প্রেমের সম্পর্ক ছিল তিন বছর ধরে। দুজনই চাকরি করত, নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে পরিকল্পনাও করছিল। কিন্তু বাড়ির লোকজন হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল যে বিয়ে হবে তাদের নিজেদের পছন্দে। এতে করে দুই পরিবারেই অস্থিরতা তৈরি হল। একদিকে প্রেম, আরেকদিকে পরিবারের সম্মান। ওই পরিস্থিতিতে ও সত্যিই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল। আমরা বন্ধুবান্ধব মিলে ওকে শুধু বলতাম ধৈর্য ধরতে, কারণ পরিবারকে একদিনে বদলানো যায় না। ইনশাআল্লাহ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তারা বোঝে।
আমাদের সমাজে আরেকটা বড় সমস্যা হল যোগাযোগের অভাব। অনেক পরিবারে ছেলে মেয়ে প্রেমের বিষয়ে কথা বলতে ভয় পায়। মনে হয় বাবা মা রেগে যাবেন বা ভুল বুঝবেন। অথচ যদি স্বাভাবিকভাবে পরিবারকে শুরু থেকেই জানানো যেত, তাহলে হয়তো এত জটিলতা তৈরি হত না। ঢাকায় এখনকার তরুণরা পড়াশোনা, চাকরি, ব্যক্তিগত জীবন মিলিয়ে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে থাকে। তার উপর পারিবারিক চাপ এসে পড়লে সম্পর্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। গুলশান বা ধানমন্ডির মতো এলাকায় বসবাসকারী পরিবারগুলো তুলনামূলক খোলামেলা হলেও মিরপুর বা পুরান ঢাকার অনেক বাড়িতে এখনও আগের ধারা চলে।
তবে আমি যেটা অনুভব করেছি, সেটা হল ধৈর্য আর কথা বলার অভ্যাস দুটোই এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে কার্যকর। যখন পরিবারের সাথে শান্তভাবে কথা বলা যায়, তখন তারাও অনেক সময় বিষয়টা বুঝতে চেষ্টা করেন। মাশাআল্লাহ, আমার নিজের পরিবারও এখন বেশ উদার হয়েছে, যদিও একসময় ওরাও আমার কিছু সিদ্ধান্তে আপত্তি জানাত। এখনকার তরুণদের জন্য আমার পরামর্শ হল সম্পর্ককে লুকিয়ে না রেখে, সঠিক সময়ে সঠিকভাবে পরিবারের সাথে আলোচনা করা। এতে সম্পর্কও টিকে থাকে, আবার পরিবারের সাথেও ভুল বোঝাবুঝি কমে।
শেষ কথা হল, প্রেম আর বিয়ের পথে বাধা থাকবেই, সেটা বাংলাদেশে খুব সাধারণ বিষয়। কিন্তু সম্মান, ধৈর্য আর খোলামেলা যোগাযোগ থাকলে বেশিরভাগ সমস্যারই সমাধান হয়। ইনশাআল্লাহ, সবাই একদিন নিজের সুখের দিকটা খুঁজে পাবে। 💛
Top comments (0)